মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
সূত্রাপুর থানায় অপরাধ দমনে ওসি সাইফুল ইসলামের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গতিশীল পুলিশিং।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সূত্রাপুর থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাইফুল ইসলাম মাদক, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, চুরি, অপহরণসহ নানা অপরাধ দমনে মাঠপর্যায়ে যে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাতে থানার জনসাধারণের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি ও আস্থা। দালালমুক্ত ও হয়রানিমুক্ত সেবার যে প্রতিশ্রুতি তিনি শুরুতেই দিয়েছিলেন, বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেছে থানার প্রতিটি স্তরে।
ওসি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে এখন থানা জুড়ে চলছে অপরাধবিরোধী ধারাবাহিক অভিযান। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা মাদকবিরোধী অভিযান, ছিনতাই প্রতিরোধ, দাগি আসামিদের ধরপাকড় ও টহল কার্যক্রমে নিরলসভাবে কাজ করছেন। তিনি নিজেই নিয়মিতভাবে প্রতিটি পুলিশ ফাঁড়িতে আকস্মিক পরিদর্শনে যান, মাদক স্পটগুলোতে হানা দেন এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে অপরাধচক্রের কার্যক্রম প্রতিহত করতে নির্দেশনা দেন।
থানা থেকে দালাল চক্রকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে ইতিমধ্যে তিনি একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। থানার আশপাশে ও অভ্যন্তরে সন্দেহভাজনদের ওপর বিশেষ নজরদারি বসানো হয়েছে। অভিযোগ জমা, মামলা রেকর্ড কিংবা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার ক্ষেত্রে কোনো দালালের প্রয়োজন নেই—এমন বার্তা বারবার প্রচার করছেন তিনি।
থানা পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে মাদক, সন্ত্রাস, জুয়া ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। চুরি-ডাকাতি সহ নানা অপরাধ প্রবণতা রোধে দিনরাত পরিশ্রম করছেন তিনি ও তার টিম। তদ্ব্যতীত, বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন, যা তাকে আরও বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছে স্থানীয় জনগণের কাছে।
সূত্রাপুর থানা এলাকায় মাদককে সবচেয়ে বড় সামাজিক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ওসি সাইফুল ইসলাম। তাঁর মতে, মাদক সব ধরনের অপরাধের মূল উৎস। তাই মাদক নির্মূল করলেই অপরাধের অনেকটাই কমে আসবে। এই নীতিতে পরিচালিত হয়ে তিনি পুরো থানা জুড়ে চালাচ্ছেন ধারাবাহিক অভিযান।
ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, “অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক, ছাড় দেওয়া হবে না। আমার দায়িত্ব পালনে কোনো পেশিশক্তিকে ভয় পাই না। জনগণের সেবাই আমার অঙ্গীকার।”
তিনি বলেন, “মাদকবিরোধী লড়াইয়ে কোনো আপস নয়। যেই জড়িত থাক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
থানায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের হয়রানি যেন না হয়, সে বিষয়ে ওসি সাইফুল ইসলাম রেখেছেন বিশেষ নজরদারি। থানায় কোনো মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালের ঠাঁই নেই বলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। পুলিশের সেবার প্রতি জনগণের আস্থা ফেরাতে তিনি থানাকে ঘোষণা করেছেন ‘ঘুষ ও দালালমুক্ত’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে।
একথা স্বীকার করেছেন সেবা নিতে আসা আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন,
“ওসি সাইফুল ইসলাম একজন ভালো মানুষ। হাসিমুখে কথা বলেন। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে শুনেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেন। এখন আর আগের মতো হয়রানি নেই।”
জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থির সময় ও নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে ওসি সাইফুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন পরিস্থিতি ছিলো উত্তপ্ত ও অনিরাপদ। সেখান থেকে তিনি দৃঢ় মনোবল ও নেতৃত্ব দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল পর্যায়ে ফিরিয়ে আনেন। এই কঠিন সময়ে থানা ও ফাঁড়ির পুলিশকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন নতুন এক জনসেবামুখী পুলিশিং কাঠামো।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মিয়া বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর এলাকাজুড়ে নিরাপত্তাহীনতা ছিল। ওসি সাহেব ব্যক্তিগত সাহস ও মেধা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন। এখন আমরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারছি।”
ওসি সাইফুল ইসলামের পুলিশিং কৌশলের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো—সততা ও মানবিকতা। তিনি কখনোই মিথ্যা মামলা বা অনৈতিক পথে কাউকে হয়রানি করেননি। তার বিশ্বাস, পুলিশকে হতে হবে সাধারণ মানুষের রক্ষক, ভয়ের উৎস নয়। তাই তিনি অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর হলেও, ন্যায্যতা ও আইনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন সবসময়।
শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বে জোর
তিনি থানা ও ফাঁড়ির প্রতিটি কর্মকর্তাকে শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে কাজ করতে বলেন এবং নিজেই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন সব কার্যক্রম। বলেছেন,
“পুলিশের শৃঙ্খলা নিশ্চিত না হলে জনসেবা সম্ভব নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান জিরো টলারেন্স।”
সমাজের অংশীজনদের সহযোগিতায় এগিয়ে চলা
ওসি সাইফুল ইসলাম মনে করেন, পুলিশের একার পক্ষে সমাজ থেকে অপরাধ দূর করা সম্ভব নয়। এজন্য তিনি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।
“সমাজের সব অংশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় একযোগে কাজ করতে হবে। পুলিশকে ঘিরে যে পুরোনো ভুল ধারণা ছিল, তা দূর করতে এখন সময় এসেছে,” — বলেন তিনি।
অপরাধ দমন, জনগণের আস্থা অর্জন এবং থানাকে দালাল ও ঘুষমুক্ত একটি সেবাকেন্দ্রে রূপান্তরের যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যাত্রা ওসি মো. সাইফুল ইসলাম শুরু করেছেন, তা ইতিমধ্যে ফল দিতে শুরু করেছে। তার নেতৃত্বে সূত্রাপুর থানা আজ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সাধারণ মানুষের আস্থা ও নিরাপত্তার প্রতীক হয়ে উঠেছে। তিনি জনগণের সমস্যা শুনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সেখানে হয়রানি বা অপেক্ষা নয়, বরং স্বচ্ছতা ও মানবিক আচরণের মাধ্যমে সমাধানই প্রাধান্য পায়।
জনগণ বলছেন, এমন অফিসারদের সুযোগ ও সময় দিতে হবে। যাদের নেতৃত্বে পুলিশ হয় জনবান্ধব, যারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে, আর সাধারণ মানুষের বন্ধু হয়ে ওঠে।