মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:১১ পূর্বাহ্ন
কেরানীগঞ্জে নোংরা পরিবেশে ভেজাল চকলেট–লজেন্স আচার উৎপাদন: অনুমোদনহীন কারখানায় শিশু শ্রমের অভিযোগ।

কেরানীগঞ্জের কুশিয়ারবাগ এলাকার নদীর ঘাট সংলগ্ন স্থানে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চকলেট ও লজেন্স আচার তৈরির একটি অনুমোদনহীন কারখানার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, “আলিফ লজেন্স” ব্র্যান্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত এই কারখানার কোনো সরকারি অনুমোদন, ট্রেড লাইসেন্স, BSTI সার্টিফিকেশন বা খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন নেই। তবুও প্রভাবশালী পরিচয় ব্যবহার করে কারখানাটি নির্বিঘ্নে চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার ভেতরে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। মেঝেতে জমে থাকা নোংরা পানি, খোলা ড্রেনের দুর্গন্ধ, ধুলাবালু এবং বিভিন্ন অজ্ঞাত রাসায়নিক গুঁড়ার সংস্পর্শে চকলেট ও লজেন্স তৈরি করা হচ্ছে। এমনকি এসব ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে অল্পবয়সী শিশুদের কাজ করতে দেখা গেছে, যা শিশু শ্রম আইন লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোঃ সোহেল নামে একজন ব্যক্তি নিম্নমানের কাপড়ের রং ও কৃত্রিম ফ্লেভারসহ বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করে এসব চকলেট তৈরি করে থাকেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, নিম্নমানের রং ও কেমিক্যালযুক্ত খাদ্য শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ ধরনের খাবার খেলে ডায়রিয়া, ত্বকের সমস্যা, কিডনি জটিলতা এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়তে পারে।

এলাকাবাসীর দাবি, ফরহাদ হোসেন আকাশ নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিক ও ম্যাজিস্ট্রেটের পিএস পরিচয় ব্যবহার করে তার মোবাইল নাম্বার, 01816-660679 তার দাপটের সঙ্গে এই ভেজাল চকলেট ও আচার তৈরির কারখানা পরিচালনা করছেন। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে চাইলে তাদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, অনুমোদনহীন এই কারখানায় তৈরি চকলেট রাজধানীর বেগমবাজারের পাইকারি বাজারে নিয়মিত সরবরাহ করা হয়। কম দামের কারণে দোকানিরা পণ্যগুলো কিনলেও অধিকাংশ ভোক্তা জানেন না যে তাদের শিশুদের জন্য পাওয়া এসব চকলেট অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে উৎপাদিত।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। তারা জানান, শিশুদের স্বাস্থ্য ও জনসাধারণের সুরক্ষায় এ ধরনের অনিয়ম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।