শনিবার, ১৯ Jul ২০২৫, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার, সহপাঠি আটক
।। মোঃইমরা
হোসেন ইমুাাা ঢাকার কেরানীগঞ্জে অপহরণের ৩ দিন পর মোঃ মোকসেদুল মমিন (১৭) নামে মাদ্রাসাছাত্রের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।এঘটনায় নিহতের সহপাঠি মোঃ ফাহিম (১৯) কে আটকের পর তার দেয়া তথ্যমতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন রতনের খামার এলাকায় একটি নির্জণ মাঠে বালুচাপা দেয়া অবস্থায় তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মোকসেদুল মমিন একই থানাধীন চুনকুটিয়া এলাকায় চানমিয়া ওহাবুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র। ফাহিমও ঐ একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের মা জানান, গত সোমবার দুপুরে মোকসেদুল মমিন বাসা থেকে বের হবার পর নিখোঁজ হয়। এর পরদিন মোকসেদুলের মোবাইলে ফোন দিয়ে তার পিতাকে জানায় যে, তার ছেলেকে অপহরন করা হয়েছে এবং জীবিত অবস্থায় পেতে হলে ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে।পরে মোকসেদুল মমিনের পিতা সাহাবুদ্দিন কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি জিডি করেন। পরে তিনি দুই দফায় অপহরনকারীদের বিকাশের মাধ্যমে মোট ১০ হাজার টাকা প্রদান করে।মোকসেদুল মমিনের পিতা বিষয়টি র্যাবকে অবহিত করলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরনকারী ও মোকসেদুল মমিনের সহপাঠি ফাহিম কে পুরান ঢাকার নবাবপুর রোড হতে আটক করে। আসামী ফাহিমের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মোকসেদুল মমিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহার করা একটি রক্তাক্ত চাকু উদ্ধার করা হয়।
আসামী মোঃ ফাহিমের বরাত দিয়ে র্যাব-১০ কেরানীগঞ্জ ক্যাম্পের ডিএডি বদিউল আলম বলেন, ফাহিম ও মোকসেদুল মমিন সহপাঠি। মোটা অংকের টাকা আদায় করার লক্ষে ফাহিম তার বন্ধু মোঃ আরিফ (২৩) এবং রাজুকে নিয়ে সুকৌশলে মোকসেদুল মমিনকে অপহরন করে ঐ এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তিতে জুসের সাথে ঘুমের ঔষধ দিয়ে প্রথমে মোকসেদুল মমিনকে অচেতন করে পরে চাকু দিয়া গলা কেটে হত্যা করে। লাশ মাটির মধ্যে চাপা দিয়া রেখে তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে চলে আসে। পরবর্তীতে মোকসেদুল মমিনের ফোন দিয়ে তার পিতার নিকট ২ কোটি টাকা মুক্তিপন দাবী করে এবং বিকাশের মাধ্যমে দুদফায় দশ হাজার টাকা আদায় করে।
নিহত মোকসেদুল মমিনের মা মমতাজ বেগম বলেন, আমার ছেলে মাদ্রসায় যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছে। পরে ছেলের মোবইলে ফোন দিলে অন্য কেউ ফোন ধরে বলে আপনার ছেলেকে অপহরণ করেছি তাকে জীবিত চাইলে ২ কোটি টাকা লাগবে। তখন আমরা বলেছি আমার ছেলেকে কিছু করবে না আমরা টাকা পাঠাবো। পরে ১০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছি কিন্তু তারপরও ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেললো। আমি এ হত্যাকান্ডের উপুযুক্ত বিচার চাই।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভ‚ঞা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। এঘটনায় থানায় একটি হত্যামামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।